জানলা ১
বটগাছের মতো জানলাটা
গায়ে হাওয়া নিয়ে গিলে
ফেলে
একটু একটু করে
ঘরের চারকোণায়
ছড়িয়ে দেয়
গায়ে মাখতে যখন শরীর
খুলে ফেলি
জানলা আমাকে আস্ত গিলে
ফেলে।
জানলা ২
জানলা দিয়ে যেটুকু রোদ
আসে
তা আমার নিজের বলতে বুক
কাঁপে
আজ থেকে পাঁচপুরুষ আগে
আমাদের বংশের এক মানুষ
বাড়ির ওপর এক ছাতা
ধরেছিল
তার ছায়ায় জানলা
খুলেছিল আর এক মানুষ
যৌবনেই যে বাড়ির চৌকাঠ
পেরিয়ে গিয়েছিল
আজ আমি প্রাণপণ
চেষ্টায়
জানলাটাকে খুলে রাখতে
পেরেছি মাত্র।
জানলা ৩
পুবের মেঘ কিভাবে
পশ্চিমে গিয়ে
যাবতীয় জল ঢেলে আসে
একমাত্র জানলাই তা ঠিক
ঠিক জানে
যেদিন বৃষ্টির
সম্ভাবনা
সেদিন সকাল থেকে কেউ আর
জানলা খোলে না।
জানলা ৪
জানলার হাতে সবকিছু
সমর্পণ করে
যারা গতবছর তীর্থে
বেরিয়ে গেছে
তাদের জানলা খোলার
সমীকরণ
এখনও আমরা ঠিক বুঝে
উঠতে পারি নি
মানুষের চামড়ার মতো
দেশটার রঙও কেমন বদলে
বদলে যাচ্ছে
জানলার ঘরেই আমরা আছি
কিন্তু তবুও জল পুড়লে
মনে হয়
আমরা রাজবাড়ির দিকে
চেয়ে আছি।
জানলা ৫
জানলা খোলা দেখলেই বোঝা
যায়
ঘরটা কতদূর পর্যন্ত
ছড়িয়ে আছে
আলোর পথে যারা হাত
পেতেছিল
তাদের হাত খালি দেখে
ফিরে গেছে সব
উঠোনে ঘাস গজানো
বাড়িটায় বৃষ্টিজলে
জানলার ছবি ভেসে উঠলে
মনে হয়
উঠোনে একটা জানলা
থাকলে
বাড়িটাকে আজকের মতো
পোড়ো বলে মনে হতো না।
অলংকরণঃ অরিন্দম
গঙ্গোপাধ্যায়
ফেসবুক মন্তব্য