(১)
অনেক ছড়িয়ে গেছিলাম
এবার গোটাবো, আকাশে
বিস্তার,
এবার ওঠাবো।।
মেলেছি অনেক ডানা
পরিণাম বহুদূর,
ফেরার পালা, এবার
ভিন্নসুর।
গিয়েছি এত কাছে তবুও
চেনোনি,
থাক পরিচয়, বাঁক
কাহিনী।
যখন মারী আসে, গোমড়া
মৃত্যুভয়
চিতা অগ্নিভ, বিকীর্ণ
পরিচয়।
পৃথার ধূসর পদধূলি
দু'পায়ে অলক্তক,
নাকি রক্তদাগ, বিদায়ী
সপ্তক।
আকাশে এত মেঘ, নাকি
ছড়ানো খই,
গর্ভিনী পাখিটির গর্ভে
শিশু কই।
যায় যা তা কি ফেরে,
নিষিদ্ধ বুমেরাং,
এখন খোলা বুক, করজোড়
পরিত্রাণ।
(২)
যে রাতে জানালার
কার্নিশে
ঘুম তুলে রাখা,
পাশবালিশের গায়ে
নিদ্রাহীন হাত অস্থির
স্পর্শ রাখে একা,
মাথার ভেতরে ভেঙে পড়ে
কাচ,
হোয়াটসঅ্যাপে লাষ্ট
সিন
রাত্তির দুটো পাঁচ,
সে রাত ধৈর্য্য হয়ে
বেঁচে আছে
তোর আর আমার মাঝে।
(৩)
ক্ষুধার ব্যঞ্জনের
পাশে কার লবণ অমৃতস্বাদ
পড়ে আছে,
শিরীষ গাছের ডালে পাখি
ডাকে
কার ডাকনাম,
হে বসন্তের লকলকে চাঁদ,
তার কাছে যেতে যদি
পারতাম
আঁচলে নিতাম বর্গমূল
হাঁসুলি সঙ্কেত আর সাম
বেদ।
প্রিয়তমা নদী দিয়ে বয়ে
গেছে রক্তপ্রস্রবণ,
পলাশ গায়ের ওপর সেই রঙ
জীবনের অধিকারে
চৈত্রের ডালে ডালে
বাঁচে।
(৪)
পলাশ রঙের ভিতর বসন্ত
পুরুষ,
নারী তাই শিমূলের ফাগ,
মেহগনি বুকে রাখা বিষদ
কোকিল,
ভোরের আলোর ভিতর অনন্ত
ডাক।
তুই একবার ছুঁয়ে দিলে
দূরে যায় সব অন্ধকার,
এমন যাদুর কাঠি যার
হাতে,
সব রামধনুগুলো শুধু
তারই একার।
(৫)
এই আকাশের দিকে তাকিয়ে
মনে হয়,
কোথাও বিষাদ নাই, মারী ও
মড়ক নাই,
পৃথিবীতে আজও স্বপ্নের
রঙ ঝরে।
ভীষণ বাঁচতে ইচ্ছে করে,
আমাদের ভীষণ বাঁচতে
ইচ্ছে করে।
অথচ, বন্ধু তোর নামের
পাশের সবুজ আলো বন্ধ
থাকলে অনেকক্ষণ,
অজানা ভয়ে আমার মাথার
ভেতর অকারণ বিকট
বিস্ফোরণ,
কেন বুকের ভেতর এমন
মাকড়সা বাসা করে,
জালের ভেতর আমি,
তখন অন্ধকারে ঘুমের
মধ্যে চক্রব্যুহের
রাস্তা খুঁজতে নামি।
চাঁদ বাড়িয়ে দেয় হাত,
এই বিষাদ কেটে যাবে,
দেখা হবে, দেখা হবে,
আবার ঠিকই দেখা হবে।
অলংকরণঃ অরিন্দম
গঙ্গোপাধ্যায়
ফেসবুক মন্তব্য